হামলার খবর এসেছে, যেখানে ২৬ জন পর্যটক নিহত আর ১৭ জন আহত হয়েছেন। ভারত সরকার বলছে, ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে একটা সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হামলার দায় নিয়েছে। আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, হামলাকারীরা কথিতভাবে পর্যটকদের ধর্ম জিজ্ঞেস করে শুধু অমুসলিমদের উপর গুলি চালিয়েছে, মুসলিমদের ছেড়ে দিয়েছে। এই ঘটনা শুনে মনে হচ্ছে, ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর এটা পর্যটকদের উপর ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
কিন্তু এখানে একটা বড় প্রশ্ন উঠছে। ঘটনাটা ঠিক এমন সময় ঘটল যখন ভারতে মুসলিমদের উপর অত্যাচার, হত্যা, নিপীড়নের খবর বিশ্ব মিডিয়ায় ঝড় তুলছে। এসব নিয়ে ভারতের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল। ঠিক তখনই এই হামলা। আর ভারত সরকারের বক্তব্য যে হামলাকারীরা ধর্মীয় ভিত্তিতে হত্যা করেছে, তা আরও সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। এটা কি শুধুই কাকতালীয়, নাকি এর পেছনে কোনো বড় খেলা চলছে? কী হতে পারে এর পেছনের কারণ?
আমার মতে প্রথমত, ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের খবরগুলো থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরানোর জন্য এটা একটা কৌশল হতে পারে। সারা দুনিয়ায় যখন ভারতের সমালোচনা হচ্ছে, তখন এমন একটা ঘটনা ঘটলে সবার মনোযোগ চলে যায় হামলার দিকে। মুসলিমদের উপর অত্যাচারের অভিযোগগুলো যেন পেছনে চলে যায়। এটা ভারত সরকারের জন্য একটা বড় সুযোগ হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, এই হামলার ধরন—যেখানে শুধু অমুসলিমদের টার্গেট করা হলো—এটা দেশের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়াতে পারে। হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান—যারা অমুসলিম, তাদের মধ্যে মুসলিমদের প্রতি ক্ষোভ বাড়তে পারে। এটা যদি ভারত সরকারের পরিকল্পিত কিছু হয়, তাহলে তারা হয়তো চাইছে জনমতকে তাদের পক্ষে নিয়ে আসতে। মানুষ যেন মুসলিমদের উপর অত্যাচারের কথা ভুলে গিয়ে এই হামলার জন্য মুসলিমদের দায়ী করে।
তৃতীয়ত, এই হামলা ভারতকে বিশ্বের কাছে ‘সন্ত্রাসবাদের শিকার’ হিসেবে তুলে ধরতে সাহায্য করতে পারে। এটা তাদের কাশ্মীরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা মুসলিমদের উপর নিয়ন্ত্রণের জন্য একটা অজুহাত দিতে পারে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তারা বলতে পারে, “দেখো, আমরা কী ধরনের সন্ত্রাসের মুখে পড়ছি!” এতে তাদের অভ্যন্তরীণ নীতির সমালোচনা কমে যেতে পারে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই হামলা কি ভারত সরকারের পূর্বপরিকল্পিত কোনো ষড়যন্ত্র? পর্যটকদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করে কি তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছে, যাতে মুসলিমদের উপর আরও অত্যাচার করা যায় বা অন্য ধর্মের মানুষদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা যায়?
সত্যি বলতে, এটা সরাসরি প্রমাণ করার মতো কোনো তথ্য আমার হাতে নেই। কিন্তু ঘটনার সময়টা খুবই সন্দেহজনক। যখন ভারতের উপর মুসলিম নিপীড়ন নিয়ে চাপ বাড়ছে, তখন এমন একটা হামলা, যেখানে ধর্মীয় বিভেদ স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হচ্ছে—এটা কাকতালীয় মনে হলেও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা আছে, যেখানে রাজনৈতিক লাভের জন্য এ ধরনের ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।
শেষ কথা হচ্ছে, পহেলগামের এই হামলা ভারতের জন্য একটা বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে। এটা তাদের মুসলিমদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ থেকে মনোযোগ সরাতে, দেশে ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়াতে, আর বিশ্বের কাছে সহানুভূতি আদায় করতে সাহায্য করতে পারে। এটা পুরোপুরি ভারত সরকারের সাজানো কিছু কি না, তা বলা মুশকিল। তবে, ঘটনার সময় আর প্রেক্ষাপট দেখে মনে হয়, এর পেছনে কিছু গভীর উদ্দেশ্য থাকতেই পারে। সত্যটা জানতে আরও তথ্যের অপেক্ষায় থাকতে হবে মনে হচ্ছে।
Comments
Post a Comment